আমরা জানবো কিভাবে সৌদি বাদশাহ ফয়সাল কে হত্যা করা হয়েছিল। 1975 সালের মার্চ মাসের কথা সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত রাজপ্রসাদে সময় প্রতিদিনই বিভিন্ন দেশ থেকে রাষ্ট্রপ্রধান কিংবা নীতিনির্ধারকরা আসছেন। বাদশাহ ফয়সালের সাথে বৈঠক করার জন্য সিরাজ প্রসাদ কে ঘিরে এমন কঠোর নিরাপত্তা ছিল।
যে সেখানে মনে হচ্ছিল যেন একটি মাছি অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না । বাদশাহ ফয়সাল কে হত্যা করেছিল । সে কিন্তু লুকিয়ে লুকিয়ে প্রসাদে ঢোকেনি । এখন প্রশ্ন আসতে পারে যেখানে মাছের উঠতে পারে না। সেখানে সেই ব্যক্তি কিভাবে ঢুকলো । মজার ব্যাপার সেই ব্যক্তি সবার সামনে দিয়েই সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশ করেছিল।
যে ভাবে সৌদি বাদশা ফয়সালকে হত্যা করা হয়ে ছিলো
কে এই হত্যাকারী জানেন যে কিনা সশস্ত্র অবস্থায় প্রবেশের পর রাজপ্রসাদের নিরাপত্তারক্ষীরা একবারের জন্য তাকে আটকাইনি আর কেনই বা সে বাদশা ফয়সাল কে হত্যা করলো। চলুন জেনে নেই পুরো ভিডিওতে সেদিন কুয়েত থেকে তেল ব্যবসায়ীদের একটা বড়সড়।
বাদশাহ ফয়সালের সাথে বৈঠক করতে রিয়াদের রাজপ্রসাদে এসেছিল। বাদশা ফয়সাল এর পাশাপাশি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ পরিবার ও মন্ত্রিপরিষদের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা আরো উপস্থিত ছিলেন । সৌদি আরবের সেসময়ের ক্যাল মন্ত্রী শেখ আহ্মেদ জাকি আমান এ বৈঠক শুরু হয়নি ।
সেখানে বৈঠকের ব্যাপারে বাদশাহ ফয়সাল করেছিলেন সময় সেখানে প্রবেশ করে বাদশার এক ভাইপো কাকতালীয়ভাবে এসেই ভাইপোর নাম ছিল ফয়সাল । ফয়সাল বিন হুসাইন অনেকদিন পর বেশ খুশী হয়ে গেলেন সাথে সাথে দাঁড়িয়ে গেলেন ।
ঘাতকের রিভলবার থেকে তিনটি গুলির শব্দ বের হলো
নাকি আলিঙ্গন করার জন্য আর ঠিক তখনই ঘাতকের রিভলবার থেকে তিনটি গুলির শব্দ বের হলো । এই গুলির শব্দ প্রচারণা মাইলখানেক দূরে অবস্থিত সরকারি অ্যাপার্টমেন্ট । সেখানে বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছেন। এক অষ্টাদশী তরুণী। বাইরে দুপুরে একসাথে খাবে এটুকু ছিল তার চাওয়া দুপুর গড়িয়ে বিকেল হল কিন্তু তার বাবা আর ফিরবে না।
ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে মুসলমানের মেয়ে । সে তার বাবা যখন বাড়ি ফিরল তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে সে কি আমার চেহারা দেখে মেয়ে জানতে চাইলেন কি হয়েছে? শেখ ইয়ামেনি আর্তনাদ করে বললেন মুসাইবা ভয়ঙ্কর বিপদ এর অনেকক্ষণ আগেই হাসপাতালের ডাক্তাররা বাদশাহ ফয়সাল কি মৃত ঘোষণা করেছে ।
তিনবার গুলি করা হয়েছিল । তাদের মাঝে একটি গুলি মিস হলে অপর কোন একটি গিয়ে বাদশার চিবুকে লেগে ছিল সেটি ছিল । তার মৃত্যুর কারণ পুরোটা সময় বাচ্চার সঙ্গে ছিলেন। ইয়ামানী তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন কিভাবে একজন ইস্পাত কঠিন মানুষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ।
যে ঘুড়িটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছিল । সেটা সেকি আমেরিকান ঘেঁষে চলে গিয়েছিল একটু এদিক-সেদিক সেদিন তার মৃত্যু হয়েছে তো বাচ্চার হত্যাকারী আর কেউ নন তাঁর প্রিয় ভাইপোকে ফয়সাল অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে । সে বাচ্চাকে গুলি করার পর খুব শান্ত ভঙ্গিতে বৈঠকখানার মাঝখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে।
তাঁর প্রিয় ভাইপোকে ফয়সাল অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে
ফয়সাল একটিবারের জন্য পালানোর চেষ্টা করেনি।সে খুব খুশি ছিল বাদশা কে হত্যা করার পর বাচ্চা ফয়সালকে সৌদি আরবের ইতিহাসের অন্যতম উদারপন্থী শাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তার মৃত্যু হলেও নিজ ঘরে নিজ পরিবারের সবচেয়ে প্রিয়তম এক সদস্যের হাতে কিন্তু কেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল ।
এর উত্তর জানতে হলে আমাদেরকে একটু পেছন ফিরে যেতে হবে সৌদি আরবের জনক ধরা হয় আব্দুল আজিজ ইবনে। সৌদ তার 100 জন সন্তানের মাঝে তৃতীয় ছিলেন। ফয়সাল বিন আব্দুলাজিজ হাজার 953 সালে ফয়সালের বড় ভাই সৌদি বিন আব্দুল আজিজ বাদশাহ হিসেবে মনোনীত হলেন ।
- বৈদ্যুতিক টাওয়ার আর মোবাইলে টাওয়ার কিভাবে তৈরি করা হয়
- প্রথমবার মানুষের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।
- কে কে থাকছেন এবার পাকিস্তান এর একাদশ এ
আর ফয়সাল হলেন যুবরাজ সেসময় সৌদি আরবের অর্থনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত নাজুক ছিল বৈদেশিক ঋণের টালমাটাল অবস্থা ছিল দেশটিকে ক্রমাগত বাড়ছে। কিন্তু সেই সময় অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন আব্দুল আজিজ এমনকি সরকারি কোষাগার অর্থ রাজপরিবারের জন্য খরচ করার। একটি অদ্ভুত নিয়ম চালু করেন তিনি।
দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় । যার ষাটের দশকের শুরুর দিকে ভয়াবহ আকার ধারণ করে । হাজার 962 সালের চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেলে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে। আলাদা একটি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করে বসেন যুবরাজ ফয়সাল সেই মন্ত্রিপরিষদে আব্দুল আজিজ এর সন্তানদের কাউকে কোন স্থান দেওয়া হলো ওই পরিস্থিতিতে আব্দুল আজিজ ঘোষণা দিলেন ।
মধ্যকার দ্বন্দ্ব ভয়াবহ যুদ্ধের পথে এগোতে লাগলো
তিনি কোনমতেই ক্ষমতা ছাড়বেন এই বিষয়ে দুই ভাই এর মধ্যকার দ্বন্দ্ব ভয়াবহ যুদ্ধের পথে এগোতে লাগলো এই অবস্থায় হস্তক্ষেপ করেন । রাজপরিবারের নীতিনির্ধারক এবং বৈশিষ্ট্য সদস্যরা তাদের হস্তক্ষেপের ফলে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন আব্দুল আজিজ এবং ফয়সাল হয়ে যান।
সৌদি আরবের নতুন বাদশা বাদশা ফয়সাল ক্ষমতায় আসার পর তিনি জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নের নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সরকারি কোষাগার থেকে রাজ পরিবারের জন্য অবৈধ ব্যয় বন্ধ করেন। তিনি দেশজুড়ে তৈরি করেন বহু মানসম্মত ইস্কুল কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় তার শাসনামলে প্রতিটি ক্ষেত্রেই উন্নয়নের মুখ দেখে ছিল।
সৌদি আরব কিন্তু এতসব এর পরেও কেন তাকে হত্যা করা হয়েছিল। কট্টরপন্থী কিছু ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্ররোচনায় একটি দল সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সেন্টার এ হামলা চালিয়েছিল । সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীদের সাথে তুমুল সংঘর্ষ হয় ।
সেই দলটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী
সেই দলটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী এবং সাধারন মানুষও পুলিশের গুলিতে নিহত হন তাদের মাঝে ছিলেন । রাজ পরিবারের এক সদস্য তার নাম ছিল প্রিন্স খালিদ বিন হুসাইন যে ফয়সাল মসজিদ নিজ হাতে বাদশা ফয়সাল কে হত্যা করেছিলেন । তারই আপন বড় ভাই ছিলেন ।
খালি নিজের ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য সবসময় বাচ্চা কি দায়ী করত। তার বুকের মাঝে দাও দাও করে প্রতিশোধের আগুন জ্বলছিল । সে আগুন তিনি বাচ্চা কে হত্যা করার মাধ্যমে নিয়েছিলেন হত্যাকারী ফয়সাল বাচ্চাকে গুলি করার পরপরই গ্রেপ্তার হন বিচারের সম্মুখীন করা হলে আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। সেই বছরের জুন মাসেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল প্রায় এক হাজার মানুষের সামনে শিরচ্ছেদ করা হয়।