মাছ হলো এমন একটি আমিষ জাতীয় খাবার, যা সারা বিশ্বে বেশ প্রচলিত ও জনপ্রিয। মাছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ হয়েছে। যা আমাদের শরীরের আমিষের ঘাটতি পূরণ করে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় 60 শতাংশ মানুষ প্রতিদিন মাছ খেয়ে থাকে। পৃথিবীতে প্রায় 20 শতাংশ মানুষ মাস ধরে তাদের জীবিকা নির্ভর করে থাকে।
মাছ হল আমাদের সকলের কাছে প্রিয় ও সুস্বাদু একটি আমিষ জাতীয় খাবার। মাছ খেলে ক্ষতি হবে না উপকার হবে আমরা এসব না ভেবেই আমরা আমাদের প্রয়োজন মত প্রতিদিন মাছ খেয়ে থাকি। ডাক্তারদের মতে, সঠিক পদ্ধতিতে মাছ রান্না করে খেলে আমাদের শরীরের কোন ক্ষতি হবে না বরং আমাদের শরীরে আমিষের ঘাটতি পূরণ হবে। যা আমাদের শরীরের গঠন প্রণালী ঠিক রাখতে সহায়তা করে থাকে।
মাছ খাওয়ার উপকারিতা
আসুন তাহলে জেনে নেই, মাছ খেলে শরীরে কি ধরনের উপকার হয়ে থাকে।
১. টাটকা মাছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে। মাছে কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে যার কারণে আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী একটি খাবার।
২. আমাদের উচিত নিয়মিত মাছ খাওয়া, যেমন সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন। নিয়মিত মাছ খেলে হাঁপানি ও প্রস্টেট ক্যান্সার থেকে আমরা রক্ষা পাবো।
৩. শিশুরা নিয়মিত মাছ খেলে তাদের হাঁপানি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাই শিশুদের নিয়মিত মাছ খাওয়ানো উচিত।
৪. ডাক্তারদের মতে, টাটকা মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার কারণে আমাদের চোখ ও মস্তিষ্ক সম্পূর্ণ সচল থাকে। চোখের রেটিনা খুব ভালো রাখে।
৫. আমাদের শরীরের 30 থেকে 50 শতাংশ ক্যানসারের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড।
৬. নিয়মিত মাছ খেলে হূদরোগ ও স্ট্রোকের মতো বড়-বড় রোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম থাকে। নিয়মিত মাছ খেলে রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৭. নিয়মিত মাছ খাওয়ার ফলে ব্লাডে সুগারের মাত্রা কম থাকে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৮. বর্তমানে আমাদের মাঝে মানসিক অবসাদ বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে বেড়ে যাচ্ছে বয়স যাদের কম তারাই সবচেয়ে বেশি ডিপ্রেশনের শিকার হচ্ছে। মানসিক চাপ আমাদের দেহের অনেকটা বড় ক্ষতি করে থাকে।
মানসিক চাপ কমাতে মাছ খাওয়ার তুলনা হয়না। মাছ খেলে মানসিক চাপ অনেকটা কম হবে, কারণ মাছের মধ্যে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে যা শরীরে প্রবেশ করে । আমাদের শরীরের ফিট হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয় ফলে মানসিক চাপ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে চাঙ্গা করে মন মানসিকতা ভালো রাখে।
আমাদের এই মানসিক সমস্যা দূরীকরণে মাছের ভূমিকা অতুলনীয়। তাই আমাদের উচিত যারা তরুণ বয়সের ছেলে মেয়ে তাদের নিয়মিত মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
৯. প্রতিদিন কাজ করার ফলে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা বাড়ন্ত শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের ক্যালসিয়ামের চাহিদা আরো বেশী হয়ে থাকে। দাঁত ও শরীরের হাড়ের গঠনে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম না থাকলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়, অল্পতেই ক্লান্তি ভাব চলে আসে ।তাই আমাদের উচিত ছোট মাছ প্রচুর পরিমাণে খাওয়া কারণ ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। মাছের কাটা সহ ছোট মাছে ক্যালসিয়াম একটি অনন্য উপাদান ।ছোট মাছ যেমন মলা-ঢেলা, টেংরা, পুটি , চিংড়ি ইত্যাদি এ জাতীয় মাছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে. এজন্য আমাদের উচিত প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও এ জাতীয় মাছ খাওয়া।
সুস্থ থাকতে কোন ধরনের মাছ খাবেন। কোন মাছ খেলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগের জন্ম হবে কীভাবে বা কোন পদ্ধতিতে রান্না করি। মাছ খেলে শরীরে কাজে লাগবে প্রদর্শক আজকাল মাছ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সবাই omega-3 সম্পন্ন মাছ খেতে বলছেন এই ওমেগা-থ্রি আসলে কি ?
মাছ খাওয়ার উপকারিতা
এর মানে হল অসম্পৃক্ত চর্বি সম্পৃক্ত চর্বি আমাদের হার্টের জন্য যতটাই ক্ষতিকর এই অসম্পৃক্ত চর্বি ততটাই উপকারী আর এই অসম্পৃক্ত চর্বি সহ অন্যান্য খাদ্যগুণ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সামুদ্রিক মাছ যেমন ধরুন রূপচাঁদা মাছ।
এছাড়াও আমি যে কোন ধরনের সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-থ্রি পারে দেশীয় মাছের মধ্যে ইলিশ মাছের সবচেয়ে বেশি ওমেগা-থ্রি রয়েছে। এছাড়াও রুই কাতল এবং অন্য যে কোন দেশীয় মাছ যেগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে বেড়ে উঠেছে প্রদর্শক।
বর্তমান সময়ে শরীরে রোগ জন্ম নেয় সেই সকল মাছ খেলে
এবার আমরা জানবো শরীরের রোগ জন্ম নেয় কোন মাছ খেলে প্রিয় পাঠক বর্তমান সময়ে শরীরে রোগ জন্ম নেয় সেই সকল মাছ খেলে যে মাছগুলো রাসায়নিক উপাদানের। খুব দ্রুত চাষ করে বড় করা হয়েছে এর মধ্যে প্রথমে তেলাপিয়া এবং পাঙ্গাসের নামটি উঠে এসেছে।
এটা একটা ভুল ধারণা রয়েছে যেমন তেলাপিয়ার পাখির। এই মানুষ অসুস্থ হবে এ ধারণাটি সঠিক নয় বাজারে পাওয়া সব তেলাপিয়া এবং পাংকাস যে রাসায়নিকভাবে বড় করা হয়েছ । তা কিন্তু সত্য নয় অনেক তেলাপিয়া মাছ এবং পাঙ্গাস মাছ যেগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে পুকুরে বড় হয়েছে।
সেগুলো খেলে কিন্তু কোনো ক্ষতি নেই বরং পাঙ্গাস মাছের পর্যাপ্ত পরিমাণ অভিযাত্রী রয়েছে। সমস্যা তখনই হয় যখন এই মাছগুলো কে রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে খুব দ্রুত বড় করা হয় তখন তখনই সেগুলোর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়।
মাছ খাওয়ার উপকারিতা
এখন কথা থেকে যায় মাছ না ভেজে খাবেন কি করে। আসল কথাটা হচ্ছে খুব বেশি তেল দিয়ে অনেক বেশি সময় বেঁধে খাবেন না মনে রাখবেন বেশি তেল দিয়ে। মাছটাকে খুব বেশি সময় ভেজে খেলে শরীর খারাপ করে স্টলের পরিমাণ বেড়ে যায়।
এবং এটি আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। হূদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে যদি আপনি সপ্তাহে তিন চারদিন মাঝখান তাহলে মনে রাখবেন। অল্প তেলে হালকা ভেজে রান্না করে খেতে পারেন আবার কেউ যদি ভাজা ছাড়া সরাসরি ইস্টিম করে।
সিদ্ধ হওয়া মাংসটা খেতে হবে
অথবা গ্রিল করে মাছ খেতে পারেন তাহলে। মাছের পুষ্টিগুণ অক্ষুন্ন থাকে ভুল করে খেলে মাছের বাইরের চামড়া যে অংশটা পুড়ে যায় সেটা বাদ দিয়ে ভেতরে সিদ্ধ হওয়া মাংসটা খেতে হবে।আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাছ কাটার সময় মাছের ফুলকো কানকো ও চোখ এই সকল অংশগুলো ফেলে দিবেন না।
কারন মাছের পুষ্টিগুণ থাকে এই সকল উপাদান গুলোর মধ্যে একদম ছোট মাছ গুরুত্ব অংশগুলো একদম ফেলে দেবেন না এবং বড় মাছের ফুলকা বাদ দেবেন না কারণ এর মধ্যে বেশি পরিমাণে ওমেগান রয়েছে। তাই মাছ কাটার সময় আপনাকে খেয়াল রাখতে।
কিভাবে মাছ কাটছেন ও পরিষ্কার করছেন
আমাদের অবশ্যই জানতে হবে যে, আপনি কিভাবে মাছ কাটছেন ও পরিষ্কার করছেন। এজন্য আপনাকে অল্প তেলে ভেজে ভাল করে সিদ্ধ করে রান্না করে খেতে হবে। অথবা গ্রিল করেও আপনি খেতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন বেশি খেলে দীর্ঘক্ষন মাছ ফ্রাই করে খাবেন না।
আমাদের উচিত বাজার থেকে সবসময় টাটকা মাছ ক্রয় করে খাওয়া। টাটকা মাছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ জাতীয় পুষ্টি বেশি থাকে। মাছ কাটার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে অল্প তেলে ভাল করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে যাতে মাছের মধ্যে কোন ধরনের ব্যাকটেরিয়া কাজ না করতে পারে।
আমাদের এই পোস্টটি আপনার কেমন লেগেছে তা কমেন্ট করে জানাতে পারেন।