আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, পৃথিবীতে ধনী দেশের তালিকা আমেরিকার অবস্থান রয়েছে শীর্ষে যেখানে মানুষের মাথাপিছু আয় অনেক বেশি। আমেরিকার জনগণের মাথাপিছু আয় হচ্ছে ৬৩.০৫ ডলার, আমেরিকার প্রধান ধর্ম খ্রিস্টান। আমেরিকানদের প্রধান ভাষা হচ্ছে ইংরেজি। আমেরিকানরা বিজ্ঞানে অধিক বিশ্বাসী তারা বাস্তবতাকে মেনে চলে।
আমেরিকাতে আপনি কোথাও এক কাপ চা খেতে গেলেও গাড়ি ছাড়া যাওয়ার উপায় নেই। আর এ কারণেই এমন অনেক মানুষ আছে যাদের আমেরিকাতে ঘর নেই খাবার নেই কিন্তু একটা গাড়ি আছে।খুব বেশি দিন হয়নি এদেশে এসেছে গাড়ি কিনবো কিনবো করে আর কেনা হয়ে ওঠেনি।
তাই বাধ্য হয়েই ওভারি চলাফেরা করতে হয়। আবার ছোট্ট মেয়ে আয়মা আর তার মাকে নিয়ে সাপ্তাহিক বাজার করতেই গ্রোসারি শপ এ যাব 17 বছর বয়সে আমেরিকান শতাংশ ভদ্রমহিলা আমাদের উবার ড্রাইভার গাড়িতে উঠে জানতে চাইলাম কেমন আছেন।
জুমার আজানের শব্দে পল্টে গেলো খ্রীষ্টান রমনীর জীবন
দিন কেমন গেল এটা প্রশ্ন করা আমেরিকাতে স্বাভাবিক ভদ্রতা আমিও সেমতে জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছেন। কিন্তু উত্তরের জন্য কোন ভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না ভদ্রমহিলা শুদ্ধ উচ্চারণে আলহামদুলিল্লাহ।আমি ভালো আছি কিন্তু আমি কি ভুল শুনলাম তারপর প্রশ্ন করলাম।
আপনি কি মুসলিম আপনার আসল বাড়ি কোথায় সে উত্তর দিল আলহামদুলিল্লাহ। আমি মুসলিম এই আমেরিকাতেই আমার বাপ দাদা চৌদ্দ পুরুষের ভিটা মাটি।মনের বাসনা থেকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি ইসলামে আসলেন কি করে ?
যদি আপনার চৌদ্দ পুরুষ আমেরিকান হয়। আপনি ইসলামে আসলেন কি করে ? তিনি উত্তর দিলেন আমি ইসলামকে বেছে নিইনি? ইসলাম আমাকে বেছে নিয়েছে। তারা তাকে বললাম আপনার এই গল্প আমাকে শোনাবেন তারপর ভদ্রমহিলা মুচকি হেসে শোনাতে শুরু করলেন।
শোনালেন তাঁর ঘুম ভাঙ্গার গল্প
শোনালেন তাঁর ঘুম ভাঙ্গার গল্প। আসুন সকল পাঠকদের অনুরোধ করছি তার এই গল্পটা দয়া করে শেষ পর্যন্ত পড়বেন। হতে পারে আপনার জীবন টা পাল্টে যাবে সে যেভাবে বলল বলল আমেরিকা মন্টানা অঙ্গরাজ্যে এক খ্রিস্টান পরিবারই আমার জন্ম। জন্মের পর যখন বুদ্ধিমান হতে শুরু করল।
তখন থেকেই আমি আমার পরিবারের অন্যান্য ভাই-বোনদের সাথে কেমন যেন মিশতে পারতাম না। আপনি তো জানেন পাহাড় আর নদী ঘেরা এক প্রাকৃতিক লীলাভূমি হচ্ছে মন্টানা। আমি দুপুরে প্রায়ই একা একা দূর পাহাড়ে চলে যেতাম। ভাবতাম আমি কেন দুনিয়াতে এসেছি আমার কি কারণে আসা আমি মনের মধ্যে কেমন যেন হাহাকার বোধ করতাম।
একটু তরুণী হবার পর আবার বন্ধুরা ভাই-বোনরা এবং তাদের বন্ধুরা সবাই মিলে ক্লাবে গিয়ে মদ খেত এবং আনন্দ করতো কিন্তু আমি তাদের সাথে কেন যেন যেতে পারতাম না। যদিও আমি খ্রিস্টান কিন্তু কোনদিন একটিবারের জন্য আমি মদ পান করতে পারিনি। আধুনিক খ্রিস্টান ধর্মে মদ্যপান নিষিদ্ধ নয়। আমার বন্ধুরা ছোট ছোট জামা পড়ে সমুদ্রে ঘুরে বেড়াত।
পরিয়ে তারা সাতার কাটবেন। আমি কোনদিন এসব পড়তে পারতাম না। কারন আমার বিবেক আমাকে প্রকাশ্যে বিকিনি পড়ে হাঁটাচলা তে বাধা দিত। কিন্তু আমি জানি না কেন জানি আমার ঠিক করতে পারতাম না। তারপর আমি আবিষ্কার করলাম।
আমার কোন ভাল বন্ধু নেই
পুরো পৃথিবীতেই আমি আসলে একা ভীষণ একা আমার কোন ভাল বন্ধু নেই। ভাই বোনেরা আমাকে তেমন একটা সময় দিত না একসময় আমার বিয়ে হল তারপর সন্তান দুনিয়াতে আসলো। আস্তে আস্তে আমার ছেলে বড় হল কিন্তু বিপত্তি ঘটলো গত 15 বছর আগে।
একদিন গভীর রাতে স্বপ্নে আমি এক অজানা কন্ঠে মোহনীয় মধুর সুরের গান শুনতে পেলাম।গানের বাক্যগুলো ছিল বড়ই অবাক করা অদ্ভুত মোহনীয়। যেমন ধরুন আল্লাহু আকবার আল্লাহু।আকবার আল্লাহ।
আরো দেখুন…
- অমুসলিমদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার পরিনাম! ও রাগ নিয়ন্ত্রণ এবং ধৈর্য্য ধারণ
- গর্ভবতী ইয়াহুদি মেয়েরা কেন বাদ্যযন্ত্র বাজায়?
ইল্লাল্লাহ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।পরদিন সকালে শিশুটির কথা ভুলে গেলাম। কিন্তু প্রতি রাতেই আমি সেই মধুর সুরের গান শুনতে পেলাম। তারপর আমি অস্থির হয়ে গেলাম এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে ঘুমের ওষুধ খেতে শুরু করলাম। ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মধুর গানই আমার ঘুম ভেঙে যায়। এভাবে প্রায় ছয় মাস কেটে গেল।
একদিন টিভিতে আমেরিকায় মুসলিম সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি পর্ব প্রচার হয়েছিল। আমি ছিলাম পাশের রুমে, সেখানেই গানটিও দেখাচ্ছিলো তারপর আমি হঠাৎ করে অবাক হয়ে গেলাম এবং দ্রুত টিভির সামনে দূরে আসলাম আর এই তো সেই গান।
আমি গত কয়েকদিন ধরেই স্বপ্ন দেখছি
যে আমি গত কয়েকদিন ধরেই স্বপ্ন দেখছি। গত ছয় মাস ধরে ইরাকি গান আমার কানে বাজছে। এইতো সন্ত্রাসীদের মুখে গান এলো কেন। তারপর আমি ভয় পেয়ে গেলাম মনে মনে। গোলাম কিশোর আমি কি তাহলে সন্ত্রাসী হয়ে যাচ্ছি। ইন্টারনেটে সার্চ দিলাম সন্ত্রাসী সংগী।সন্ত্রাসীদের গান মুসলিম সংগীত এসব নামে খুজতে খুজতে পেয়ে গেলাম।
তারপর জানলাম সংগীতের নাম হচ্ছে ,আজা এটি হচ্ছে মুসলিমদের নামাজে আহবানে ডাক আমার মত খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেয়া।একজন মানুষ কেন এই আযান শুনতে পেল? কি আমাকে আপন করল ?কে বলল হাইয়া আলাল ফালা কল্যাণের দিকে এসো। তারপর আমি বুঝতে চাই লাম ইসলাম কি ব্রব কি রাসূল কি কবর হাশর মিজান এর মানিক শুরু হয়ে গেল বিস্তর পড়াশোনা আমি বুঝতে পারলাম।
আকাশের মালিক আমাকে দ্বীনের জন্য কবুল করেছেন। আমার সহস্ত্র রাতের ঘুম ভেঙ্গে গেল আমি জেগে উঠলাম উঠলাম ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম নয়। ভূত সন্ত্রাসীরা ইসলামের নাম ব্যবহার করে, মাত্র খুব ভোরে আমি জুমা মসজিদে গিয়ে শাহাদাট করলাম। আপনি কি জানেন এই কালিমার বিনিময় আমি কী হারিয়েছে। আমার স্বামী আমাকে ত্যাগ করেছে।
যে ছেলেকে পেটে ধরেছি বড় করেছি সেই ছেলেও আমাকে ট্যাগ করেছি। আমি তো আগেই একা ছিলাম।এখন আরো একা হয়ে গেলাম। আজ 15 বছর আমি একা আপনি কি জানেন এত কিছুর বিনিময় আমি কি পেয়েছি।আমি পেয়েছি আমার আল্লাহকে। হুইচ ছোটবেলা থেকেই আমার অন্তরে যে হাহাকার ছিল না পাওয়ার অস্থিরতা বেদনা ছিল আমি বুঝতে পেরেছি।
আমার সেই হাহাকার ছিল কালিমার ছবি
আমার সেই হাহাকার ছিল কালিমার ছবি। পানি ছাড়া মাছ যেমন ছটপট ছটপট করে। আমার হৃদয় কালেমা ছাড়া সেভাবে ছটফট করছিলো আমার হাহাকার ছিল ইসলামের। এখন আমার মনের শূন্যতা দূর হয়ে গেছে আমি এখন নিজেকে পরিপূর্ণ মনে করি আপনি জানেন। এই বুড়ো বয়সে আমাকে কিছু খাবারের জন্য ওভার চালাতে হয়। কয়েক বছর আগেই আমি একজন মিশরীয় মুসলিমকে বিয়ে করেছে।
শুধুমাত্র জীবনের একাকীত্ব বুঝাতে কিন্তু সে এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। তাকেও হয়তো রবের কাছে চলে যেতে হবে ,কিন্তু আমি চেষ্টা করছি তার যথেষ্ট সেবা করার। ছেলেটাকে আমি দেখি না আজ দুই বছর হয়ে গেল। অনেকদিন আগেই আবার ছেলের ঘরে নাতি হয়ে যায়। কিন্তু জানেন একটিবারের জন্যও তার চেহারা পর্যন্ত দেখতে পাই নি।
আমি চাইলেই স্বাভাবিক জীবনে চলতে পারতাম। স্বামী-সন্তান নিয়ে আনন্দে থাকতে পারব কিন্তু আমি দুনিয়া-আখেরাতের মাঝেই হিসাব করে দেখলাম, আমার জন্য আখিরাতে গুগোল এখন যদি আমি না খেয়ে মরে যাই। আমার কোন দুঃখ নেই। জানিনা কখন রবের আসে যায় আমি দ্রুত রব এর সঙ্গে দেখা করতে চাই।
আমাদের পেজটি ভাল লাগলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন এবং আরো নতুন কিছু পেতে আমাদের পেজের সঙ্গে থাকবেন ধন্যবাদ।