আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ,মানুষ সামাজিক জীব। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ তার পরিবার নিয়ে একসঙ্গে থাকতে বেশি পছন্দ করে। পরিবার নিয়ে সমাজে বসবাস করতে গিয়ে আমাদের অনেক বন্ধু-বান্ধব আত্মীয়-স্বজনদের সাথে মিশে থাকতে হয়।
পরিবার নিয়ে সমাজের সাথে মিশে থাকতে থাকার সময় আমাদের আশেপাশের আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশ ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে অনেক সময় নানা কারনে ঝগড়া বিবাদের সৃষ্টি হয় ।যার ফলে মানুষ মানুষের সাথে সামাজিক দ্বন্দ্ব, হিংসা,লোভ ইত্যাদির শিকার হয়ে থাকে। কিছু কিছু মানুষ থাকে আবার যারা আমাদের অনেক ক্ষতি করার চেষ্টা করে। তাই আমাদের সকলেরই জেনে রাখা ভালো যে, সমাজের কি ধরনের মানুষ আমাদের ক্ষতি করতে পারে তাদের থেকে সচেতন থাকাই ভালো।
মানুষ অনেক ধরনের হয় অনেক চরিত্রের মানুষ দেখা যায়। কিছু মানুষ আমাদের জীবনে আসে আমাদের ভালোর জন্য আবার কেউ আসে আমাদের খারাপ করার জন্য কেউ আমাদের জীবনে আসে আবার তারা চলেও যায়। এবং তাদের চলে যাওয়াটা খুব কষ্টকর হয়ে থাকে কিন্তু যারা চলে যায় সেটি তাদের জন্য কষ্টকর না হলেও আপনার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই কষ্ট করবে।
কয়েক ধরনের মানুষের থেকে দূরে থাকুন
তো আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি যে, সমাজের কোন ধরনের মানুষের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা উচিত নয। বরং তাদের থেকে সবসময় আপনি ও আপনার পরিবারকে দূরে রাখা উচিত। আপনার সচেতনতাই আপনি ও আপনার পরিবারকে সবসময় সুরক্ষিত রাখবে।
যেসব প্রকৃতির মানুষের সাথে আপনার পরিচয় রাখা উচিত নয় এবং আপনার জীবনের তাদের কোনো সুযোগ দেওয়া চলবে না। এক নম্বর হচ্ছে গসিপ মেকার্স বিকাশ কারা,যারা প্রচন্ড পরিমানে মানুষের পেছনে কথা বলতে ভালোবাসে। এই লোকগুলোর একটা স্বভাব হচ্ছে , এরা সামনে এসে কথা বলার সাহস পায় না। কিন্তু আপনার পেছনে অনেক কথা বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যে বলে মানুষের সাথে ঝগড়ার সৃষ্টি করে।
মানুষের পিছনে নানান ধরনের সমালোচনা করে একে অপরের সাথে ঝগরা সৃষ্টির জন্য মিথ্যা, হিংসা ,লোভ ইত্যাদি নিয়ে উসকানিমূলক কথা বলে। এসব লোক মানুষ দেখলেই মানুষের নামের সমালোচনা করতে বেশি পছন্দ করে ।সমাজে কিভাবে বিরোধ ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি করা যাবে সব সময় এগুলো নিয়ে আলোচনা করে।
আর যেহেতু মন্দ কাজ গুলো মুখরোচক হয় তাই পরনিন্দা, পরচর্চার সুরগুলো খুব জমজমাট হয় এবং এ ধরনের মানুষ সবচেয়ে বেশি মানুষকে আকৃষ্ট করে। এই প্রকৃতির মানুষ সাধারণত আমাদের পরিবারে আশেপাশের সব সময় কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে। এই ধরনের লোকদের মিষ্টি কথার ফাঁদে আমাদের কখনো পড়া উচিত নয়।
অনেক সময় পরিবারের ছোট সদস্য গুলো এসব লোকের ফাঁদে পরে। যার ফলে আমাদের পরিবারে এক ধরনের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। তাইএমন না যে আপনি তাদের সাথে খারাপ আচরণ করবেন এবং দেখা হলে তাদেরকে সালাম দিবেন না।
আপনি তাদের সাথে মিষ্টি মুখে কথা বলবেন । আন্তরিক আচরণ করবে। কিন্তু সাবধান ভুলেও তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে যাবেন না। যে পর্যন্ত না তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনছে সেই পর্যন্ত তার সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করবেন না। কেননা তার সাথে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে গিয়ে এমন যেন না হয়ে যায় যে সে আপনার ক্ষতি করে বসে। মনে রাখবেন এদের একটা স্বভাব হচ্ছে, এরা আমাদের কাছ থেকে ইনফর্মেশন নিবে আমাদের ভালো বন্ধু হবার নাটক করবে। তারপর সেটা নিয়ে অন্যের সাথে গিয়ে সমালোচনা করবে।
ইমোশনাল নিয়ে মজা করা
এমন কোন সময় থাকে না যে এরা নিজেদেরকে সর্বপরি ভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখে। মনে করেন আজকে আপনার এমন একটি দিন গেছে যে দিনটি ছিল খুবই কষ্টকর। কিন্তু এই কষ্টকর দিনেও আপনার কোন দোষ ছিল না। তবুও আপনাকে সেটা জন্য অনেক কথা শুনতে হয়েছে। এখন আপনি এমন একজন মানুষকে খুঁজছেন যে আপনাকে সাপোর্ট করবে। তাই আপনি এমন একজন মানুষকে কল করলেন ,যিনি আপনাকে সাপোর্ট করবো।
এবার তিনি এসে আপনার কথাটি শুনার বদলে আপনাকে সাপোর্ট করার জায়গায় আপনাকে এখন কিছু শব্দ শুনিয়ে দিল। যেটা শুনার আপনার খুবই খারাপ লাগলো। ওই পরিস্থিতির মধ্যে আপনার ইমোশন নিয়ে মজা করবে এবং আপনাকে নানান ধরনের কটু কথা শুনাবে। সেটা শোনার জন্য বা এমন পরিস্থিতিতে পড়ার কথা আপনি কখনোই কল্পনা করেন নি।
এখন আপনার মনটা এমনিতেই খারাপ তার উপর এইসব কথা শুনলে কি আপনার ভালো লাগে। কথা গুলো মাধ্যমে বেসিক্যালি আপনাকে ছোট করা হলো। আপনি শুনে বুঝতে পারলেন যে মানুষটি আপনাকে ছোট কর।
তাই এ ধরনের মানুষদের কাছ থেকে সবসময় দূরে থাকবে। এদের সঙ্গে আর যাই হোক ভুলেও আপনার কোন কষ্ট বা ব্যথার গল্প শেয়ার করতে চাইবেন না। সব সময় মনে রাখবেন আপনার সময় যতই খারাপ হোক আপনার পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন আপনি কখনোই এমন কোন লোকের সাথে আপনার পরিস্থিতির কথা শেয়ার করবেন না। সবসময় তাদের থেকে দূরে ও সচেতন থাকবেন তাহলে আপনি ও আপনার পরিবারকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন।
সবকিছু জেনেও না জানার ভান করা
আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা সব সময় আমাদের পাশে বন্ধু হয়ে থাকতে চাই। কিন্তু তারা আসলেই কী আমাদের বন্ধু নাকি বন্ধু হয়ে থাকার অভিনয় করে। তারা আমাদের যদি সবকিছু জেনেও না জানার ভান করেন। তারা আপনার পরিস্থিতি,পরিবার ও আপনার প্রবলেম ইত্যাদি সবকিছু জেনেও না জানার ভান করে।
তাই আপনার সিচুয়েশন তাদের সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না কারণ এটার মূল্য তারা বুঝবে না। তার একটাই কারণ এরা নিজেদেরকে অনেক বড় করে দেখাতে এতটাই ভালবাসে যে মানুষের সামনে আপনার কষ্টটা বুঝতে পারেনা ভুলে যায়। তার জন্যে এমন কিছু কথা বলে যেগুলো আমাদের শুনে খুব খারাপ লাগে এবং পরবর্তীতে মনে হয় কেন যে আমি তাকে এসব কথা বোঝাতে গেলাম।
তখন আপনার রিয়েলাইজ হবে তাই অনুশোচনার পূর্বে এদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। আর যদি আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থেকে থাকে তাহলে তাদেরকে এখনই আনফ্রেন্ড করে দিন। কারণ এ ধরণের মানুষরা কোনদিন বন্ধু হতে পারে না।তাই সমাজের গুণী লোকজন এদেরকে বলে থাকেন এরা হচ্ছে এক ধরনের সমাজের কীট যা কখনো পরিবর্তিত হবার নয়।
একদমই বুঝেনা বারবার একই ভুল করে এমনকি আপনি তাকে যতই শেখার না কেন এরা সে একই ভুল পথে পা বাড়াবে। এ ধরনের মানুষদের কাছ থেকে সরাসরি দূরে থাকবেন ।যার কারণ এরা আপনার কথা একবারের জন্যও শুনবে না এরা সেটাই করবে যা এদের ঠিক মনে হবে।
আপনার মনে হতে পারে সে বোঝেনা আসলে ব্যাপারটা বুঝিনি। কিন্তু সে তাই করছে যা সে চাইছে কিন্তু সেটাও বলছে না যে আপনাকে সে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এগুলোর একটা স্বভাব হচ্ছে তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে চায় না। নিজেদের ভুল গুলো চোখে দেখে না বরং তারা একই ভুল পথে বারবার পা বাড়াচ্ছে, মানে তারা জানে যে এই পথে গেলে আমার পায়ে কাঁটা ফুটবে জানার পরেও সেই পথে তারা বারবার যাচ্ছে।
সুতরাং এদেরকে কখনই ভাল পথে ফেরানো সম্ভব নয়, বরং আমাদের উচিত এদেরকে সমাজে চিহ্নিত ব্যক্তি হিসাবে গণ্য করা। যাতে সমাজের অন্য কোন মানুষ এদের ফাঁদে পা না দেযণা।এদের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক সৃষ্টি না করে।
আমাদের এই সচেতনমূলক পোষ্ট টি আপনার কেমন লাগলো তা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং পরবর্তীতে আরো ভালো কিছু পেতে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে থাকবেন ধন্যবাদ।